Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ২২nd মে ২০২৫

বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে “Competition Policy in Bangladesh: Prospects, Challenges and the Way Forward” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত


প্রকাশন তারিখ : 2025-05-22

গত ২০ মে ২০২৫ তারিখ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল, ঢাকায় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে “Competition Policy in Bangladesh: Prospects, Challenges and the Way Forward” শীর্ষক সেমিনার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন জনাব এ এইচ এম আহসান এঁর সভাপতিত্বে আয়োজিত উক্ত সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা জনাব শেখ বশিরউদ্দীন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মাহবুবুর রহমান, সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র‌্যাপিড) এর চেয়ারম্যান ড. এম এ রাজ্জাক। সেমিনারে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন এর চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর আবাসিক প্রতিনিধি (চলতি দায়িত্ব) মিস সোনালী দয়ারত্নে। এছাড়া সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, বাংলাদেশে অবস্থিত বিভিন্ন দূতাবাসের প্রতিনিধিগণ, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ, চেম্বার ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিগণ, শিক্ষক, গবেষক, আইনজীবীবৃন্দ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ এবং বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এর সদস্য ড. আখতারুজ্জামান তালুকদার।

সেমিনারে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে ড. এম এ রাজ্জাক প্রতিযোগিতা কমিশনের বর্তমান সাংগঠনিক কাঠামো, কমিশনের কাজের ক্ষেত্রে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতাসমূহ, যেমনঃ বাজেট স্বল্পতা, কর্মকর্তাগণের দক্ষতার অভাব, জনবল সংকট এবং কমিশন সম্পর্কে জনসাধারণের মাঝে প্রচারণার অভাব ইত্যাদি তুলে ধরেন। তিনি উক্ত প্রতিবন্ধকতাসমূহ হতে উত্তরণে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রদান করেন। উক্ত কর্মপরিকল্পনায় ৬২ টি সুপারিশ প্রদান করা হয়েছে যার মধ্যে ৩১ টি সুপারিশ স্বল্পমেয়াদী এবং ২৩টি সুপারিশ মধ্যমেয়াদী। উক্ত সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা কমিশনকে আরো কার্যকর ও শক্তিশালী করা সম্ভব বলে ড. এম এ রাজ্জাক মতামত ব্যক্ত করেন।

সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি জনাব কামরান টি রহমান, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) এর মহাপরিচালক ড. এ কে এনামুল হক, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এর সদস্য ড. আফরোজা বিলকিস এবং যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন কার্যালয় এর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা জনাব ইসাম মোসাদ্দেক। প্যানেল আলোচনায় প্রতিযোগিতা কমিশনকে শক্তিশালীকরণে বৈশ্বিক উত্তম চর্চাসমূহ অনুশীলন এবং Leniency, Dawn Raid এর বিধান যুক্ত করাসহ আইনের সংশোধনের উপর বক্তাগণ গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়াও বক্তাগণ কমিশনের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কর্মকর্তাগণের উচ্চতর প্রশিক্ষণ এবং প্রতিযোগিতা আইন বাস্তবায়নে বেসরকারি খাতের সাথে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা জনাব শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, গত ১৫ বছরে সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ধ্বংস করার ফলে বেশ কিছু সুবিধাভোগী ব্যবসায়িক গোষ্ঠী তৈরি হয়েছিল। ফলে মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তির কাছে পুরো বাজার ব্যবস্থা কুক্ষিগত হয়ে পড়ে। আমাদের এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। তাই প্রতিযোগিতা কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, ব্যবসায়ীসহ সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা আরো বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু ভালো পদক্ষেপ নেওয়ায় বর্তমানে দেশের প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ে সুদিন ফিরে এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হলেও ধীরে ধীরে সকল ক্ষেত্রে সফলতা আসছে। অন্য সব প্রতিষ্ঠানের মতো বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সক্ষমতাও বিগত সরকারের সময়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। যে কারণে সাধারণ মানুষ কমিশনের কার্যক্রমের খুব বেশি সুফল পায়নি। দেশের মানুষ তাদের প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিযোগিতার সুফল দেখতে চায়। মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রতিযোগিতা কমিশনকে কাঙ্ক্ষিত জায়গায় নিয়ে যেতে হবে।

সেমিনারে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা আইনের ধারণাটি তুলনামূলক নতুন। তাই জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কমিশনের প্রচার-প্রচারণার কার্যক্রম আরো বৃদ্ধি করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে। সেপ্রেক্ষিতে, কমিশনের কর্মকর্তাগণের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।

সমাপনী বক্তব্যে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন জনাব এ এইচ এম আহসান বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশন শুধু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানসমূহকে জরিমানা করে না, সুরক্ষাও দেয়। ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান যারা বাজারে অসম প্রতিযোগিতায় পড়ছে, তাদের সুরক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি যে সকল প্রতিষ্ঠান নতুন ব্যবসা উদ্যোগকে বাজারে প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করছে, তাদের প্রতিযোগিতা আইনের আওতায় নিয়ে আসতে আমরা কাজ করছি। বাজারে অবৈধ যোগসাজস রোধ করে সব প্রতিষ্ঠানের সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ করা প্রতিযোগিতা কমিশনের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।